বর্ণিত আছে, হযরত ইসাম বিন ইউসূফ একদা হযরত হাতিম আসাম্ম (র)-এর মজলিসে এসে তাকে প্রশ্ন করতে চাইলেন। তিনি হাতিম আসাম্মকে বললেন, হে আবু আব্দুর রহমান! আপনি কিভাবে নামায আদায় করেন? হযরত হাতিম তখন ইসলামের দিকে মুখ ফেরালেন এবং বললেন, যখন নামাযের ওয়াক্ত আসে, তখন আমি উঠে। প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য উযু করি। ইসাম বললেন, প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য উযু কিরূপ?
তিনি বললেন, প্রকাশ্য উযু হলো, আমি পানি দ্বারা প্রকাশ্য অঙ্গসমূহ ধুয়ে নিই। আর অপ্রকাশ্য উযু হলো, আমি অঙ্গসমূহ সাত জিনিস তথা— অতীত গুনাহের তাওবা, অনুশোচনা, পার্থিব ভালোবাসা বর্জন, সৃষ্টি জীবের প্রশংসা, নেতৃত্বের লোভ, বিদ্বেষ এবং হিংসা বর্জন দ্বারা ধৌত করি । এরপর আমি মসজিদের দিকে যাই এবং মসজিদে গিয়ে অঙ্গসমূহকে প্রসারিত করি।
এরপর আমি খানায়ে কা’বাকে দেখতে থাকি, ভয় ও আশার মাঝে দাঁড়িয়ে যাই। মনে করি আল্লাহ আমাকে দেখছেন, জান্নাত আমার ডানে, জাহান্নাম আমার বামে, মালাকুল মউত আমার পেছনে। আর এ সময় আমি কেমন যেন আমার পদযুগল পুলসিরাতের উপর রাখা অবস্থায় থাকি। আর মনে মনে ভাবি, এ নামাযই আমার (জীবনের) শেষ নামায। অতঃপর আমি নিয়ত করি এবং যথাযথভাবে তাকবীর বলি, গভীর ধ্যানে ক্বিরাত পাঠ করি, বিনয় ও হেয়তার সহিত রুকু করি । রোনাজারীর সহিত সিজদা করি, আল্লাহর রহমতের আশা নিয়ে তাশাহহুদ পাঠ করি, ইখলাসের সহিত সালাম ফিরাই। ত্রিশ বছর যাবত এই হলো আমার নামায। ইমাম তখন হাতিম (রহ) কে বললেন, এটা এমন এক বিষয় যা আপনি ছাড়া অন্য কেউ এর ক্ষমতা রাখে না। একথা বলে তিনি কাঁদতে লাগলেন।

0 মন্তব্যসমূহ